“সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও ভূমিকা পালন করার কারণে তাকে রাষ্ট্রীয় “বীর উত্তম” খেতাব দেয়া হয় কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের খেতাব ‘বীর উত্তম’ প্রত্যাহারের বা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। আজ স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর জিয়াউর রহমানের যে খেতাব রয়েছে সেই খেতাব রাষ্ট্রীয় ভাবে বাতিল করা হলে তারা যে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পেত সেই সব রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাও বাতিল করা হবে”।
খন্দকার মোশতাক মুক্তিযুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় মুক্তিযুদ্ধের স্মরণীয় ব্যক্তিদের তালিকা থেকে তার খেতাবও বাদ পড়বে। শুধু তিনিই নন তার সাথে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, ও মোসলেম উদ্দীনকে যে রাষ্ট্রীয় খেতাব দেয়া হয়েছিলো সেটিও বাতিল করা হবে।
৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭২তম সভা রাজধানীর স্কাউট ভবনে আয়োজিত হয়। সেই সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত এখন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে জামুকা। এরপর মন্ত্রণালয় গেজেট আকারে প্রকাশ করবে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা রয়েছে সেই তালিকা থেকে শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের নামের সঙ্গে যে “বীর উত্তম”, “বীর বিক্রম”, ও “বীর প্রতীক”, উপাধি ছিল।
সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আরও যে মদদদাতা রয়েছেন, তাদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের একটি কমিটিও করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রাম-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে এবং অন্য দুই সদস্য হলেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও অপর সদস্য, উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং জামুকার সদস্য শাজাহান খান এমপি বলেন, সভায় আলোচিত বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খেতাব বাতিলের বিষয় কোন কথা বা সিদ্ধান্ত না থাকলেও ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধার সনদ যাচাই-বাছাই ও বাতিল-সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার সময় এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়। তখন এ বিষয় নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনার পর জিয়াউর রহমানসহ সবার খেতাব ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় জামুকা।
প্রত্যেককেই তার অপরাধের জন্য শাস্তি পেতে হয় তাই জিয়াউর রহমান শাস্তি পাবে তার অপরাধের জন্য, এ কথা জানিয়ে জানিয়ে সাবেক এক মন্ত্রী বলেন, বিশ্বে এমন অনেক মানুষই আছে যাদের পুরস্কার ও ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছে। অপরাধীদের হয়তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাদ দেওয়া যাবে না, কিন্তু তারা যে খেতাব পেয়েছে তা বাদ দেওয়া যাবে এবং তারা তাদের করা অপরাধের জন্য শাস্তি অবশ্যই পাবে।
জামুকার এ সভায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সহ আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য শাজাহান খান এবং উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, মো. মোতাহার হোসেন, মো. শহীদুজ্জামান সরকার এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রশিদুল আলম ও মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান বীর প্রতীক। পদাধিকার বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামুকার প্রধান উপদেষ্টা।