জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস ৯৯৯ এর মাধ্যমে খুব ভোরে খবর আসে যে নানুয়ারদিঘির পূজা মণ্ডপের ভিতরে প্রতিমার পাদদেশে একটি কোরান রাখা হয়েছে।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান।
পুলিশ সেখান থেকে কুরআন নিয়ে এসেছে।
কিন্তু রাত দশটার মধ্যে একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে যেখানে প্রতিমার হাঁটুর কাছে কোরান দেখা যায়।অনেকে বিভিন্ন লাইভ বক্তৃতা দিয়ে কুরআন অবমাননার অভিযোগ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বিবিসিকে বলেন, রাত ১১ টার দিকে হঠাৎ করে কোরানের অবমাননার খবর ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, সকালে নানুরদিঘির মণ্ডপে যখন কোরআন দাগ দেখা যায়, তখনই পুলিশকে খবর দেওয়া হয় এবং পুলিশ এসে কুরআন সরিয়ে দেয়।
“কিন্তু খবরটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েকটি মাদ্রাসা ছাড়াও অনেক স্থানীয় লোক বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ সেখান থেকে মণ্ডপে হামলা শুরু করলে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে।”
তিনি বলেন, কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গেছে কিন্তু সেগুলো কোথায় তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে, ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোরআন অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয় এবং অনেক প্রতিবাদ ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করা হয়।প্রসঙ্গত, বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় এখন তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করছে।
পূজা উদযাপন পরিষদের কুমিল্লা জেলা শাখার সচিব নির্মল পাল বলেন, ঘটনাটি খুব ভোরে ঘটে।
“তারা এখন শহর জুড়ে পূজা বিরোধী বিক্ষোভ করছে, পুজো ব্যাহত করার পরিকল্পনা অনুযায়ী কোরান ছেড়ে দিয়েছে। বেশ কয়েকটি মণ্ডপে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু পুলিশ প্রবেশ করতে পারছে না, কিন্তু গেট বা সামনের স্থাপনা ভাঙচুর করেছে,” বলেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা জানান, দুর্গোৎসব উপলক্ষে কুমিল্লার অনেক পূজা মন্ডলে উৎসব চলছিল। কিন্তু মণ্ডপ থেকে মূর্তিটি সরানো হয়েছে যেখানে আজ কোরান পাওয়া গেছে। ম্যানেজাররা জানিয়েছেন, পুজো বন্ধ হওয়ায় তাঁরা হাল ছেড়ে দিয়েছেন।
এদিকে, বিকেলে আরেকটি মন্দির এলাকায় হিন্দুদের একটি দল পূজা বিরোধী মিছিলকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
তবে জেলা প্রশাসক বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।