মহান আল্লাহ তাআলা বারোটি মাসের মাঝে সবচেয়ে উত্তম মাস হিসেবে রমজান মাস নির্ধারণ করে দিয়েছেন । মহান আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় বান্দার ক্ষমা প্রার্থনার জন্য শেষ্ঠ মাস হিসেবে মর্যাদা দান করেছেন । রমজান মাস ইসলামে অপরিসীম তাৎপর্যপূর্ণ একটি পবিত্র মাস। এটা মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগীতে নিয়োজিত হওয়ার এবং আল্লাহর প্রতি তাদের ভক্তি বাড়ানোর সময়। রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হল কুরআন তেলাওয়াত। কুরআন ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ এবং এটি নবী মুহাম্মদের কাছে নাযিলকৃত ঈশ্বরের বাণী। রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত অসংখ্য। হাদিস অনুসারে, রমজানে কুরআন তেলাওয়াত করা রমজানের বাইরের সব মাসে তেলাওয়াতের সমতুল্য। বলা হয়ে থাকে যে, যে ব্যক্তি রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াত করবে তার গুনাহ মাফ হবে এবং তার নেক আমল বহুগুণ বেড়ে যাবে। উপরন্তু, রমজান মাসে রোজা রাখাকে একটি ইবাদত হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এই সময়ে কুরআন তেলাওয়াত রোজা রাখার সওয়াব বাড়িয়ে দেয়। রমজানে কুরআন তেলাওয়াত করা মুসলমানদেরকে আল্লাহর সাথে তাদের সম্পর্ক শক্তিশালী করে যা পুরুষ্কার স্বরূপ মহান আল্লাহ তাআলা পরকালে মুমিন্দের জন্য রেখেছেন জান্নাত সামগ্রিকভাবে, রমজানে কুরআন তেলাওয়াত করা একটি অপরিহার্য ইবাদত যা এতে জড়িতদের জন্য অসংখ্য উপকার ও ফজিলত নিয়ে আসে।
হজরত জিবরাইল (আ.) মহানবী (সা.)-এর জীবনের শেষ বছরের রমজান মাসে পূর্ণ কোরআনকে মহানবী (সা.)-এর কাছে দু’বার পাঠ করে শুনান’ (বোখারি)
মহান আল্লাহ তাআলা রমজান মাসে তার প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নিকট হযরত জিবরাঈল (আঃ) মাধ্যমে ওহী প্রেরণ করেন । হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত জিবরিল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন এবং নবীজি (সা.) তাকে কোরআন মাজিদ শোনাতেন।’ (বুখারি : ১৯০২) রমজান যেমনি ভাবে আল কোরআন নাজিলের মাস তেমনি ভাবে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করার মাস । যে ব্যাক্তি রমজান মাসে আল কোরআন তিলাওয়াত করল এবং সাওম পালন করল আল্লাহ তাআলা তার উপর খুশি হয়ে যাবে । মহান আল্লাহ তাআলা রমজান মাসে শয়তানকে শিকল দ্বারা আবদ্ধ করে রাখে । যেন সকল মানুষ মহান আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদের সকল পাপ পূর্ণ্য তে পরিণীত করে নিতে পারে ।
বিশিষ্ট সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোরআন ও রোজা কেয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে রব! আমি তাকে খাদ্য ও যৌনসম্ভোগ থেকে বিরত রেখেছি। অতএব হে মহান আল্লাহ আপনি তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি, (অর্থাৎ না ঘুমিয়ে সে তেলাওয়াত করেছে) অতএব হে আল্লাহ আপনি তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। নবীজি (সা.) বলেন, অতঃপর তাদের উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’ (মুসনাদে আহমদ : ৬৬২৬; মুসতাদরাকে হাকিম : ২০৮০)
ইবাদত হচ্ছে রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করে তা খতম করা । আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) রমজানে কোরআন তেলাওয়াত করতেন । আমাদের উচিত রাতে কোরআন বেশি তিলাওয়াত করা । মহান আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে অধিক পরিমাণে স্মরণ করা এবং কোরআন শরিফ অন্যকে শেখানো ।
আমাদের পরকালে মুক্তি পেতে হলে রোজা ও কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে জানা তা পালন করা এবং তা অন্যকে জানাতে হবে । যেহেতু রমজান কোরআন নাজিলের মাস তাই আমরা রমজান মাসে কোরআন পাঠের নেকি কোরআন পাঠ এর সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানব । আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ‘রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন খতম করতেন তাই আমরাও আল কোর আনের আয়াত পাঠের মাধ্যমে পূর্ণ কোরআন কয়েক বার খতম দিব । ‘যে ব্যক্তি কোরআন নিজে শেখে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয় সেই হচ্ছে আল্লাহর নিকট প্রিয় ব্যাক্তি ।
আরো পড়ুন-