দরুদ শরীফ একটি অত্যন্ত সুন্দর এবং শক্তিশালী প্রার্থনা যা মুসলমানরা আল্লাহর কাছে নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর তাঁর আশীর্বাদ ও রহমত বর্ষণ করার জন্য প্রার্থনা করে। দরুদ শরীফ পাঠের অসংখ্য ফজিলত রয়েছে এবং মুসলমানদের জন্য এটি ঘন ঘন পাঠ করা অত্যন্ত বাঞ্ছনীয়। দরুদ শরীফ পাঠের অন্যতম প্রধান সুবিধা হল এটি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা, সম্মান ও প্রশংসা প্রদর্শনের একটি মাধ্যম। দরুদ শরীফ পাঠ করে, মুসলমানরা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে সমস্ত মানবতার জন্য পথপ্রদর্শক এবং রহমত হিসাবে প্রেরণ করার জন্য আল্লাহর কাছে তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। উপরন্তু, দরুদ শরীফ পাঠ করা অনেক আধ্যাত্মিক, মানসিক এবং শারীরিক উপকার নিয়ে আসে, যেমন একজনের জীবন থেকে উদ্বেগ, চাপ এবং নেতিবাচকতা দূর করে এবং একজনের বিশ্বাস, আধ্যাত্মিকতা এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি বৃদ্ধি করে। সামগ্রিকভাবে, দরু’দ শরী’ফ পাঠ করা একটি ইবাদতের কাজ যা অসংখ্য আশীর্বাদ নিয়ে আসে এবং মুসলমানদেরকে আল্লাহ ও নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সাথে তাদের সংযোগ দৃঢ় করতে সাহায্য করে। আমাদের প্রত্যক এর উচিত প্রতিদিন দরুদ শরীফ পাঠ করা ।
ইসলাম ধর্মে দরুদ শরীফ পাঠ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দরুদ শরী’ফ হল নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি দোয়া ও দোয়া পাঠানোর একটি মাধ্যম। আমরা যখন আল্লাহর কাছে দোয়া করি আমরা তখন দরুদ শরীফ পাঠ করি । আমরা বলি নবীর প্রতি আল্লাহর অসীম রহমত প্রার্থনা করছি, যিনি ছিলেন মানবতার প্রতি আল্লাহর ভালোবাসা ও কল্যাণের চূড়ান্ত পথ প্রদর্শক । দরুদ শ’রীফ পড়া শুধুমাত্র নবী মুহাম্মদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা দেখানোর একটি উপায় নয়, এটি আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা চাওয়ার ক্ষেত্রেও সাহায্য করে এবং এর ফলে আমাদের হৃদয় ও আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। অধিকন্তু, দরুদ শ’রীফ পাঠ আমাদের শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে জানা যায়। সুতরাং, প্রত্যেক মুসলমানের জন্য নিয়মিত দরুদ শরীফ পাঠ করার অভ্যাস করা অপরিহার্য, কারণ এটি কেবল একটি প্রার্থনা নয় বরং আমাদের জন্য মুক্তি ও পথনির্দেশের মাধ্যম।
আরবী উচ্চারণ।
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
বাংলা উচ্চারণ।
আল্লা-হুম্মা শ্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা শ্বাল্লাইতা আলা ইবরা-হিমা ওয়া আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মদ, কামা বা-রাকতা আলা ইবরা-হীমা ওয়া আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
বাংলা অর্থ।
হে আল্লাহ। তুমি মুহাম্মদ ও তার বংশধরের উপর রহমত বর্ষণ কর। যেমন তুমি ইব্রাহিম ও তার বংশধরের উপর রহমত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গরবান্বিত। হে আল্লাহ। তুমি মুহাম্মদ ও তার বংশধরের উপর বরকত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইব্রাহিম ও তার বংশধরের উপর বরকত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গরবান্বিত।
মুসলমানরা দরু’দ শরীফ পাঠ করে এক ধরনের প্রার্থনা যা তাদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর সম্মানে বলা হয়। দরুদ শরীফ পাঠ করা হয় নবী মুহাম্মদের উপর রহমত প্রেরণের জন্য এবং তাঁর শিক্ষা ও অনুশীলনকে সম্মান করার জন্য। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, নবী ছিলেন আল্লাহর শেষ রসূল এবং তাঁর জীবন ছিল সমস্ত মুসলমানদের জন্য পথনির্দেশের উৎস। দ’রুদ শরীফ পাঠ করা নবীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা চাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে তাঁর সুপারিশ চাওয়ার একটি উপায়। দরু’দ শরীফ এমন একটি উপাসনা হিসাবেও কাজ করে যা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে এবং ঈমানকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এটিকে আল্লাহর আশীর্বাদ খোঁজার একটি উপায় হিসাবে বিবেচনা করা হয় যাতে একজন সৎ ও পুণ্যময় জীবনযাপন করতে পারে। তাই মুসলমানরা দরুদ শরীফকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ভক্তি সহকারে পাঠ করে কারণ এটি আধ্যাত্মিক এবং পার্থিব উভয় উপকার নিয়ে আসে বলে বিশ্বাস করা হয়।
আরো পড়ুন–
রমজানে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত